" শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে গাজা, ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা - dailymorning.online

banner

শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে গাজা, ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা

 

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন যেন থামার নামই নিচ্ছে না। লাগাতার বোমাবর্ষণ, খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি এবং মানবিক সহায়তার রুদ্ধ দরজায় উপত্যকাটি ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে মৃত্যুপুরীতে।


গত ২৪ ঘণ্টায় নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকেই। যুদ্ধকালীন এই অমানবিক পরিস্থিতিতে চরম সংকটে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্য খাত।


কুয়েত স্পেশালাইজড হাসপাতালের সূত্র জানায়, এখন সেখানে ৭৫ শতাংশ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী অনুপস্থিত। পর্যাপ্ত ওষুধ, অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম, অক্সিজেন সিলিন্ডার—সবকিছুরই অভাব।


জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় হাসপাতালগুলোর এক-তৃতীয়াংশ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বাকি অংশও আগামী দুই মাসের মধ্যেই পুরোপুরি ফুরিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


গত ২ মার্চ থেকে গাজার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ জারি করেছে ইসরায়েল। তারা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে জ্বালানি সরবরাহে বাধা দিচ্ছে, এমনকি জ্বালানির মজুদ স্থাপনকেও ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে। ফলে ত্রাণ কার্যক্রম কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। খাদ্য ও পানীয়ের অভাবে গাজার জনসাধারণ দুর্ভিক্ষের কষাঘাতে ধুঁকছে।


জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে—গাজা উপত্যকায় “বিভিন্ন মাত্রায় দুর্ভিক্ষ চলছে”, যা দ্রুত রূপ নিতে পারে গণ-মানবিক বিপর্যয়ে।


গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫২ হাজার ছাড়িয়েছে, আহত হয়েছে লাখো মানুষ। পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি, যাদের একাংশ এখনও খোলা আকাশের নিচে অনিশ্চয়তার মধ্যে বসবাস করছে।


বিশ্ববাসীর সামনে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে—এই মানবিক বিপর্যয় আর কতকাল চলবে? শিশুদের করুণ চিৎকার, ধুঁকতে থাকা মায়েদের আকুতি এবং হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় প্রাণ হারানো মানুষের ছবি—সবকিছু যেন কাঁদিয়ে তুলছে বিবেক।

Next Post Previous Post

banner