আশাভঙ্গের কারণে ওপারে চলে যান কাদের
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। সরকার পতনের পরপরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশত্যাগ করেন। তবে দলের বিপদের সময়ে অনেক প্রভাবশালী নেতার অনুপস্থিতি হতাশ করে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে চলে যান প্রতিবেশী ভারতীয় ভূখণ্ডে।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য ওয়াল-এর এক্সিকিউটিভ এডিটর অমল সরকারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের তার দেশত্যাগের কারণ ও পেছনের বাস্তবতা নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই সাক্ষাৎকার এখন ভাইরাল।
ওবায়দুল কাদের জানান, “আমি বাংলাদেশেই ছিলাম প্রায় তিন মাস। একটা চেষ্টা করছিলাম—দেশের ভেতর থেকেই কিছু করা যায় কিনা। শ্রমিক অসন্তোষ, কর্মচারীদের ক্ষোভ—সবকিছু কাছ থেকে দেখছিলাম। বিশেষ করে গার্মেন্টস সেক্টরে যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল, সেটা কাজে লাগিয়ে সংগঠনের পুনর্জাগরণের চেষ্টা করেছি।”
তবে পরিস্থিতি দ্রুতই পাল্টে যায়। কাদের বলেন, “এক পর্যায়ে দেখি একে একে সবাই গ্রেপ্তার হচ্ছে। আমি নেত্রীর পরেই বড় টার্গেট ছিলাম। তখনই আমার নামে ২১২টি খুনের মামলা হয়। অনেকেই বলল, সাবধানে থাকি যেন। এমনকি অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীও বলেছিল, যেন এখান থেকে বেরিয়ে ভারত যাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল, নিয়মিত ঔষধ খেতে হয়। ধরা পড়লে সেই ঔষধের ব্যবস্থা কে করবে—এই দুশ্চিন্তাও কাজ করছিল। শেষ পর্যন্ত অনেক ভেবেচিন্তে ভারতে চলে আসি।”
আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা সাক্ষাৎকারে এমনভাবে ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেন, যাতে স্পষ্ট হয়—ক্ষমতা হারানোর পর নিজ দলের ভেতরেই আস্থার সংকট ও নেতৃত্বের শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। সেই হতাশার অনুভব থেকেই ওপারে পাড়ি জমান ওবায়দুল কাদের।