বাংলাদেশে পহেলা জানুয়ারিতে যত জন্মগ্রহণ করে, পৃথিবীর কোন দেশে এত রেকর্ড নেই: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) জন্মতারিখ হিসেবে ১ জানুয়ারি উল্লেখ রয়েছে, যা বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় , এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এত মানুষ একদিনে জন্মগ্রহণ করেছে বলে কোনো রেকর্ড নেই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, অনেক মানুষ নিজের প্রকৃত জন্মতারিখ জানে না। নারীদের পরিচয়ও অনেক সময় নিজ নামের মাধ্যমে হয় না। বরং তারা পরিচিত হন কারো মেয়ে, মা, অথবা শাশুড়ি হিসেবে। অনেক সময় কেউ জানেই না সেই নারীর প্রকৃত নাম কী।”
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বর্তমান এনআইডি ব্যবস্থায় নানা জটিলতা রয়েছে। অনেক মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এনআইডি তৈরি করতে গিয়ে অনেক সময় ৬০ বা ৭০ বছর বয়সী মানুষদের অনুমানভিত্তিক জন্মতারিখ বসাতে হচ্ছে, কারণ তারা নিজের জন্মতারিখ জানেন না। তখনই দেখা যায়, ‘১ জানুয়ারি’ তারিখ বসানো হচ্ছে, যেটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।”
তিনি সুপারিশ করেন, “সব হাসপাতালে জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে হবে। সন্তান জন্মের পরপরই জন্মসনদ, এনআইডি এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য সনদপত্র হাসপাতাল থেকেই সরবরাহ করতে হবে। এজন্য প্রতিটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী থাকতে হবে যারা এসব কার্যক্রম বাধ্যতামূলকভাবে সম্পন্ন করবেন।”
তিনি আরও বলেন, “স্কুল-কলেজের শিক্ষক, বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের এ বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে। কারণ, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফর্ম পূরণের সময় তারাই জন্মতারিখ বসিয়ে দেন। এর ফলেই অনেক শিক্ষার্থীর এনআইডিতে জন্মতারিখ ১ জানুয়ারি হয়ে যায়।”
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসের মতে, এই সমস্যা শুধু প্রশাসনিক নয়, সামাজিকভাবে নারীদের পরিচয়ের অভাব, জন্মনিবন্ধন ও শিক্ষাব্যবস্থার দায়িত্বহীনতা মিলিয়ে একটি জটিল বাস্তবতা তৈরি করছে। এর সমাধানে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ, নীতিগত পরিবর্তন এবং সচেতনতা বৃদ্ধি।