১০ লাখ গাজাবাসীকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা আমেরিকার
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা থেকে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় পুনর্বাসনের একটি পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনে গোপনে আলোচনা শুরু হওয়া এই পরিকল্পনাটি এখনো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় রয়েছে এবং এটি নিছক ধারণা নয়, বরং বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চলছে।
এনবিসি'র তথ্য অনুযায়ী, এ পরিকল্পনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই লিবিয়ার নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তা ও এক সাবেক মার্কিন কূটনীতিক জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়াকে একটি আর্থিক প্রণোদনার বিনিময়ে এই প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে হিমায়িত থাকা কয়েক বিলিয়ন ডলারের লিবিয়ান তহবিল এই পুনর্বাসন চুক্তির অংশ হিসেবে মুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এসব সম্পদ জব্দ অবস্থায় রয়েছে। লিবিয়ারকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এই আর্থিক সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে তা মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে। ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎ, গাজার পুনর্গঠন ও লিবিয়ার স্থিতিশীলতা—এই তিনটি বিষয়ই এর সফলতা নির্ধারণে মুখ্য হবে।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কিংবা লিবিয়ার সরকার এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এরই মধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ফিলিস্তিনিদের এমনভাবে স্থানান্তর একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হতে পারে এবং এটি তাদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার অধিকার হরণ করবে। এই পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ কী হবে তা সময়ই বলবে, তবে একে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিতর্ক ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।
সূত্র: এনবিসি নিউজ, রয়টার্স, টাইমস অব ইসরায়েল